বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
গাইবান্ধা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পুরস্কার বিতরণ গাইবান্ধা পৌরসভার নগর মাতৃসদন কেন্দ্রের ভার্চুয়াল উদ্বোধন সুন্দরগঞ্জ সরকারি কলেজে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের উদ্বোধন সাঘাটায় অবৈধ বালু উত্তোলন : প্রশাসনের অভিযানে ব্যবসায়ীর ৫ লাখ টাকা জরিমানা গোবিন্দগঞ্জে (অব.) সশস্ত্র বাহিনী ঐক্য পরিষদের মতবিনিময় ফুলছড়িতে কিন্ডারগার্টেনে সহপাঠীদের হাতে শিক্ষার্থী নিগ্রহের অভিযোগ ঘাঘট নদীতে শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার সাদুল্লাপুরে বেগুন ক্ষেতে মোজাইক ভাইরাস: দুশ্চিন্তায় কৃষক কামারপাড়া কলেজে একাদশ শ্রেণির ওরিয়েন্টেশন ক্লাস গাইবান্ধা সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টশন ক্লাস

গোবিন্দগঞ্জের চন্ডিপুর চরপাড়া গুচ্ছগ্রাম অপরাধীদের আখড়ায় পরিনত

গোবিন্দগঞ্জের চন্ডিপুর চরপাড়া গুচ্ছগ্রাম অপরাধীদের আখড়ায় পরিনত

গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর চরপাড়া গুচ্ছগ্রাম অপরাধীদের নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। প্রতিনিয়তই সন্ধ্যার পর চুরি, ছিনতাই, মাদক কেনাবেচা ও পতিতাবৃত্তিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা এখানে ঘটেনা। কোন ধরণের রাখঢাক ছাড়াই প্রকাশ্যে চলে মাদক বেচাকেনা।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় মোট ৫টি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- তালুককানুপুর ইউনিয়নের তাজপুর ও চন্ডিপুর কাটাবাড়ি ইউনিয়নের ফুলাহার এবং দরবস্ত ইউনিয়নের গোসাইপুর ও চক রহিমাপুর। বিগত ২০১৬-২০১৭ ইং অর্থ বছরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গুচ্ছগ্রামগুলো নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে চন্ডিপুর গুচ্ছগ্রামটি করতোয়া নদীর বালুর চরে অবস্থিত। চন্ডিপুর চরপাড়া গুচ্ছগ্রামের চতুর্দিকে রয়েছে করতোয়া নদী। এই নদীটি ঘিরে রেখেছে গ্রামটি। তবে এই গ্রামের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগের জন্য ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে একটি সড়ক রয়েছে।
গুচ্ছগ্রামটিতে শতাধিক অসহায় পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই রয়েছে। কিন্তু গুচ্ছগ্রাম ঘিরে অনেক অপরাধী চক্র সক্রিয়। এখানে খুব সহজেই ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ সব ধরণের মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। এছাড়াও জ্বীনের বাদশা পরিচয়ধারী প্রতারক চক্রসহ রয়েছে হ্যাকাররা। তাদের পাশাপাশি বিচরন করছে সমাজ নিষিদ্ধ পতিতা। তারা মাদকদ্রব্য সেবন করে পতিতাদের সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এদিকে ধাবিত হচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকেরা। এতে সামাজিক অবক্ষয় ঘটছে। ফলে উঠতি বয়সের ছেলেদের নিয়ে অভিভাবক মহল বিপাকে পড়ছেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিনিয়তই রাতের অন্ধকারে চরপাড়া গুচ্ছগ্রামের ঘরের বেড়া ও চালের ঢেউটিন খুলে বিক্রি করছে একটি চিহ্নিত সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত দল। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ১৫টি ঘরের বেড়া ও চালের ঢেউটিন খুলে নিয়ে গেছে তারা। গত মঙ্গলবার রাতেও এ গ্রামের সরকারি ঘরের ঢেউটিন খুলে নিয়ে গেছে ওই চক্র। এছাড়াও গুচ্ছগ্রামবাসীর জন্য সরকারিভাবে স্থাপন করা অর্ধ শতাধিক নলকুপের হ্যান্ডেল চুরি হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, গুচ্ছগ্রামে ঠাঁই নেয়া অসহায় পরিবারের লোকজনের ব্যবহৃত জিনিসপত্র প্রতিনিয়তই রাতে চুরি হচ্ছে। সচেতন মহলের ধারণা, ওই চক্রটি নেশার টাকার যোগান দিতে এসব অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর ভাঙ্গনের শিকার আনজুয়ারা বেগম, রোখশানা বেগম, ফিরোজ কবির, গোলাম হোসেন, আশিদা বেগম, রহিমা বেওয়া ও পুতুল আক্তারসহ কয়েকটি বিধবা পরিবার অতিকষ্টে ওই গুচ্ছগ্রামে ঠাঁই নিয়ে সেখানে বসবাস করছে। তারা এখানে বছরখানেক ধরে বসবাস করলেও এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাহীনতার অভাবে ভয়ে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেনা।
ভুক্তভোগীরা জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসির নিকট অভিযোগ করেও এ বিষয়ে কোন প্রতিকার পাইনি। বরং পাল্টা বিপদে পড়ে মারডাং খেয়ে গুরুতর আহত হতে হয়েছে । ঘরের টিন খুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করায় সম্প্রতি গত ৫ নভেম্বর রাতে ফিরোজ কবিরকে (৩৫) গুচ্ছগ্রাম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও অটোরিক্সা চালক গোলাম মিয়ার (৩০) বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে বলেছি। গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রকৃত অপরাধীদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com